ইন্টেরিয়র- পুরনো আসবাব কে নতুন করে সাজানো

ইন্টেরিয়র- পুরনো আসবাব কে নতুন করে সাজানো

ঘরের পুরনো আসবাবের সঙ্গে মিশে থাকে নানা স্মৃতি, গল্প-কথা। থিমভিত্তিক গৃহসাজে যে দামি আর ব্র্যান্ডের ফার্নিচার-ফ্যাব্রিকসই প্রয়োজন, তা নয়। কম খরচে হতে পারে রিসাইকেল।

 

 

আলমারি-

পুরনো নকশাদার আলমারির পাল্লা দরজায় বসিয়ে নিন। অ্যান্টিক লুক আসবে ঘরের সাজে কিংবা ছিমছাম আলমারির পাল্লায় মাপমতো একটা আয়না বসিয়ে সিঁড়িঘর কিংবা সদর দরজার বাইরের দেয়ালে সাজাতে পারেন। বাকি রইল আলমারির ভেতরের তাক আর দুই পাশের অংশ। রান্নাঘরের কেবিনেট, জুতার কেবিনেট, বুক শেলফ, দেয়াল তাক, যা খুশি বানিয়ে নিন। পুরনো ওয়ার্ডরোবও একইভাবে ব্যবহার করতে পারেন।

 

আয়না-

কারুকাজ করা বা ছিমছাম যেমনই হোক পুরনো হলে ফেলে না দিয়ে ফ্রেমসহ আয়না খুলে ফেলুন। যেকোনো দেয়ালের সৌন্দর্য বাড়াতে এর জুড়ি পাবেন না। শোবার ঘরের দেয়াল কেবিনেটের পাল্লায়ও বসিয়ে দিতে পারেন। ড্রেসিং টেবিলের নিচের অংশে হতে পারে টিভি ট্রলি বা খাবার ঘরের কেবিনেট। প্যাসেজে একটু জায়গা পেলে সেখানেও রাখতে পারেন। ওপরে দু-একটি শোপিস, বনসাই বা ফুলদানি রাখুন।

 

খাট-

পুরনো আমলের নকশাদার খাটটি ঘরে বেমানান লাগছে? খাটের স্ট্যান্ডগুলো খুলে ফেলুন। পায়াগুলো কিছুটা ছোট করে নিন। তারপর পছন্দের রঙের বার্নিশ করুন। পেয়ে যাবেন মানানসই লো হাইট খাট। খাটের মাথার দিকের নকশার অংশ ফেলে না দিয়ে সোফার পিঠের দিকে জুড়ে দিন। আধুনিক অ্যান্টিক সোফা পেয়ে যাবেন। বানিয়ে ফেলতে পারেন দোলনাও।

 

পুরনো সিন্দুক-

লকার-কেবিনেটের যুগে একটা নকশাদার কাঠের সিন্দুক অনেকটা উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া গুপ্তধনের মতো। বার্নিশের একটা প্রলেপ দিয়ে ওপরে একটা কাচ বসিয়ে দিন। অ্যান্টিক সোফার সঙ্গে হয়ে যাবে জুতসই সেন্টার টেবিল। আবার এই সিন্দুক দিয়েই করে ফেলতে পারেন বসার ব্যবস্থা। বার্নিশ করে তার ওপরে একটা গদি বসিয়ে দিন। সঙ্গে কালারফুল কুশন। ঘরে বনেদিয়ানা আনতে আর কী চাই!

 

পুরনো সেলাই মেশিন-

বাড়িতে পুরনো সেলাই মেশিন থাকলে সেটাকে বাদ দেবেন কেন। বানিয়ে ফেলুন শিশুর পড়ার টেবিল কিংবা আপনার স্টাডি টেবিল। মেশিনটি ফ্রেম থেকে খুলে নিন। ফাঁকা জায়গায় বসিয়ে দিন পাতলা কাঠ বা বোর্ড। এরপর অ্যানামেল পেইন্ট দিয়ে রং করলেই পেয়ে যাবেন একটা নতুন টেবিল। পুরনো কেবিনেট বা রিডিং ডেস্ক ফেলে না দিয়ে বাথরুমের দেয়ালে লাগিয়ে নিন। প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম রাখা যাবে। পেইন্ট করে বারান্দার দেয়ালের সঙ্গে রাখতে পারেন। খবরের কাগজ ও ম্যাগাজিন স্টোরেজের ব্যবস্থা হিসেবে চমত্কার। ডেকো পেইন্ট করে নিলে ভিজে নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থাকবে না। তবে এ জন্য টেবিলটি মজবুত হওয়া চাই।

 

নকশি কাঁথায় নয়া-

ঘরে পুরনো অব্যবহূত নকশি কাঁথা থাকলে ফেলে না দিয়ে শীতল পাটির চারপাশে মুড়িয়ে বর্ডার করে নিতে পারেন। কাঁথার নকশি পাড় কেটে জানালার পর্দায় সেলাই করে নিতে পারেন। ছোট মোটিফের নকশা থাকলে ফ্রেমে বাঁধাই করে দেয়াল সাজানো যেতে পারে।

 

ওল্ড ইজ গোল্ড-

গৃহসজ্জায় নতুনের সঙ্গে পুরনোর মিশেলে প্রকাশ পায় রুচিবোধ। পুরনো মূর্তি, ল্যাম্প, এলপি প্লেয়ার বা গয়নাদানি, পিতলসহ নানা ধাতুর তৈজসপত্র বা মূর্তি থাকলে সেগুলো স্বচ্ছন্দে জায়গা পেতে পারে বসার কিংবা খাবার ঘরের শোকেসে। পোড়া মাটির কাঁসা বা পিতলের তৈরি মূর্তি, পানপাত্র, বাসনকোসন বিভিন্ন জীবজন্তুর প্রতিকৃতি, হুঁকো, কাঁসার নকশা করা আয়না, হাতির দাঁতের চিরুনি ও নানা শোপিস, এমনকি গয়নার বাক্স, চুরি, ল্যাম্প, তামা ও পিতলের নকশারা মোমদানি, হাতি-ঘোড়া, আয়নার ফ্রেম, পিতলের স্লেটে খোদাই করা নকশাসহ নানা কিছু হতে পারে আধুনিক গৃহসাজের সামগ্রী।

 

 

পুরনো নকশার খাট, দরজা ফেলে না দিয়ে তৈরি করে নিতে পারেন নতুন কোনো আসবাব

 

 

 

 

নতুনত্ব আনতে আসবাবের বিভিন্ন অংশে করাতে পারেন পেইন্ট।

 

 

 

 

সুত্রঃ দৈনিক কালের কন্ঠ

ছবিঃ সংগৃহীত