
ত্বকের যত্নে আর্গান অয়েল
আটলান্টিক মহাসাগরের কোল ঘেঁষে উত্তর আফ্রিকার ছোট্ট দেশ মরক্কো। এ দেশের আর্গান বৃক্ষের ছোট ফলের শক্ত খোলস ভাঙলে পাওয়া যায় বাদামের মতো বস্তু।
এটি থেকে স্থানীয়রা প্রাচীনকাল থেকে তেল বানিয়ে আসছে। এই আর্গান অয়েলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, ভিটামিন ই, ওমেগা-৬ ও ফ্যাটি এসিড। বিশ্বখ্যাত বিভিন্ন বিউটি প্রডাক্টে আর্গান অয়েল ব্যবহৃত হয়।
ত্বকের যত্নে-
এটি অন্য অনেক তেলের তুলনায় বেশ হালকা, ত্বকে দ্রুত শোষিত হয় এবং এতে কোনো তেল চিটচিটে ভাব বা অস্বস্তি হয় না। ময়েশ্চারাইজার হিসেবে তাই আর্গান অয়েল অতুলনীয়। নিয়মিত ব্যবহারে ত্বক সুস্থ ও উজ্জ্বল দেখায়। শীতে ভেজা শরীরে আর্গান অয়েল ব্যবহার করলে আলাদা লোশন বা বডি ক্রিম ব্যবহারের প্রয়োজন হয় না। রুক্ষ ও শুষ্ক ত্বকের কোমলতা ফিরিয়ে আনতে আর্গান অয়েল বিশেষ কার্যকর। ব্রণের প্রকোপ কমাতে এবং ব্রনের দাগ দূর করতে এর সুনাম রয়েছে।
কয়েক ফোঁটা টি ট্রি অয়েলের সঙ্গে মিশিয়ে ব্রন ও ব্রনের দাগের ওপর নিয়মিত মাখলে উপকার পাওয়া যায়। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ এন্টি-অক্সিডেন্ট, তাই এন্টি এজিং বা তারুণ্য ধরে রাখার ক্ষমতা রয়েছে।
রুক্ষ, শুষ্ক, নিষ্প্রাণ, ফেটে যাওয়া ত্বক ও ঠোঁটের যত্নে এটি দারুণ কাজে দেয়। মাতৃত্বজনিত স্ট্রেচ মার্ক দূর করতে আর্গান অয়েল ব্যবহূত হয়। হাত, পা ও নখের দৈনন্দিন যত্নে আর্গান অয়েল অতুলনীয়। এটি নখের ভঙ্গুরতা কমায়, পা ফাটা রোধে সহায়তা করে। স্কিন টোনার ও নাইটটাইম ময়েশ্চারাইজার হিসেবে এটি উপকারী। রাতে মুখ ধোয়ার পর কয়েক ফোঁটা আর্গান অয়েল এমনি অথবা রেগুলার টোনারের সঙ্গে মিশিয়ে মুখে মাখলে ত্বকের রুক্ষ ভাব দূর হয়। ত্বক হয় কোমল। এটি সূর্যের ক্ষতিকর আল্ট্রা ভায়োলেট রশ্মি থেকে ত্বককে সুরক্ষা দেয়। শুষ্ক ত্বকে সানস্ক্রিনের কার্যকারিতা বাড়াতে অল্প আর্গান অয়েল মিশিয়ে নিতে পারেন।
ক্লিনজার ও স্ক্রাবার-
সপ্তাহে একদিন ডিপ ক্লিন করতে একটু বেশি পরিমাণে আর্গান অয়েল মুখে মেখে নিন। এবার সহনীয় গরম পানিতে তোয়ালে ভিজিয়ে আলতো হাতে তেল মুছে ফেলুন। ত্বক হবে ভেতর থেকে পরিষ্কার। স্ক্রাবার হিসেবেও এটি কার্যকর। এ জন্য আর্গান অয়েলের সঙ্গে অল্প চিনি মিশিয়ে আলতো হাতে সার্কুলার মোশনে ম্যাসাজ করুন এক মিনিট। কুসুম গরম পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলতে হবে।
চুলের যত্নে-
চুলের কন্ডিশনার ও স্টাইলিং প্রডাক্ট হিসেবে আর্গান অয়েলের খ্যাতি রয়েছে। শীতে হেয়ার ড্রায়ার ব্যবহারের আগে কিংবা চুলে কার্ল বা স্ট্রেটনিং করার আগে অল্প আর্গান তেল হাতের তালুতে নিয়ে চুলে ভালো করে লাগিয়ে নিন। বিভিন্ন হেয়ার স্টাইলিং ও হিটিং চুলের যে ক্ষতি করে, তা সারিয়ে তুলতে পিওর আর্গান অয়েল ও আর্গান অয়েল হেয়ার সেরাম দুর্দান্ত কাজ করে। রুক্ষ চুল প্রাণবন্ত ও সুন্দর করতে গোসলের পর ভেজা চুলে কন্ডিশনার হিসেবে কয়েক ফোঁটা আর্গান অয়েল মেখে নিন। চুলের রুক্ষতা বা আগা ফাটা সমস্যায় রোজ রাতে যেকোনো হারবাল তেলের সঙ্গে সমপরিমাণ আর্গান অয়েল মিশিয়ে লাগান। ভালো ফল পাবেন। চুল পড়া সমস্যায়ও এটি বেশ কাজে দেয়।
খেয়াল করুন
আর্গান অয়েল কেনার সময় অবশ্যই প্রস্তুতকারী ব্র্যান্ড ও আমদানিকারকের সুনামের ওপর গুরুত্ব দিন। এ ছাড়া নেটে পণ্যটির গ্রাহক রিভিউ যাচাই করে নেওয়া ভালো।
সূত্রঃ দৈনিক কালের কন্ঠ
ছবিঃ সংগৃহীত